দৃষ্টি(ভয়ংকর ভুতের গল্প)
টমি প্রতিদিনের মতো সন্ধ্যাবেলা তার পড়ার রূমে পড়তেছে। বাহিরে তখন প্রচুর বৃষ্টি। বৃষ্টি এলে কার না ভালো লাগে। টমিও বৃষ্টি খুব পছন্দ করে, রুমে বসে বৃষ্টির আনন্দ নিচ্ছে ও পড়তেছে।
রুমের ভেতর টা খুব ঠান্ডা অনুভব করল টমি। বৃষ্টি আসার ফলে রুমের ভেতর টা খুব ঠান্ডা হয়ে গেছে। টমি পড়তেছে...
রুমের জানালাগুলো বারবার আপনা আপনি বন্ধ হচ্ছে ও খুলছে।
বৃষ্টির সাথে হালকা বাতাস বইছে। সেজন্যই রুমের জানালাগুলো খুলতেছে বন্ধ হচ্ছে।
টমি দেখলো যে তার বন্ধু ছাতা নিয়ে জানালার পাশে এসে দাঁড়ালো। এবং তাকে বলল বন্ধু, তুই একটু আমাকে তোর বইটা দিবি, যে বইটা তুই লাইব্রেরী থেকে নতুন এনেছিস।
টমি বলল আরে বন্ধু তুই আরে ভিতর আয়। তার বন্ধু বলল নারে আজকে আসবো না দেরি হয়ে যাচ্ছে। বাসায় গেলে মা বকবে, তাই তুই তাড়াতাড়ি বইটা দিয়ে দে এই বৃষ্টির মধ্যে বেশিক্ষণ দাঁড়াতে পারবো না।
টমি তার নতুন বইটা তার বন্ধুর হাতে তুলে দিল, তার বন্ধু বইটা নিয়ে বাড়ির দিকে ফিরে গেল। টমি পুনরায় পড়ায় মনোযোগ বসালো ও পড়তে লাগলো। টমির মা রান্না ঘরে রান্না করতে ছিল। বাসায় আর কেউ নেই এই সময়।
টমির ছোট ভাই ও বড় বোন এক আত্মীয় বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছে তাই এই মুহূর্তে টমি ও তার মা ছাড়া বাসায় আর কেউ নেই।
টমি একবার রান্না ঘরে গেল দেখল রান্না হয়েছে কিনা। কিন্তু তার মা বলল না বাবা এখনো রান্না হয়নি। তুমি যাও পড়তে থাকো রান্না হলে আমি তোমাকে ডেকে দেবো। ঠিক আছে বলে টমি পুনরায় তার পড়ার রূমে চলে গেল।
বাহিরে প্রচুর বৃষ্টি, হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে গেল। তখন সময়টা সন্ধ্যা বেলা। চারপাশ খুব অন্ধকার হয়ে গেল। এই সময় বিদ্যুৎ চলে যাওয়া মানে বিরক্তিকর ও ঝামেলা।
মা আমার রুমে একটি মোম জ্বালিয়ে দিয়ে গেল। আমি মোমের আলোতে পড়তেছি। তখনো জানালা খোলা কারণ বৃষ্টির মধ্যে জানালা খোলা থাকলে অন্যরকম একটা আনন্দ। কিছুক্ষণ পর টমি খেয়াল করলো তার বন্ধু পুনরায় ছাতা নিয়ে জানালার পাশে হাজির। টমি তার বন্ধুকে বললো কিরে তুই আবার এসেছিস। বাড়িতে যাসনি? তার বন্ধু বলল মানে কি? আমি বাড়িতে যাব মানে?
আমি তো কেবল তোর এখানে আসলাম। কোথায় একটু ঘরে আসতে বলবি। বসতে বলবি তা না করে আমাকে উল্টো বলছিস আবার এসেছি বাড়িতে গিয়েছি কিনা।
টমি বলল একদম দুষ্টুমি করবি না কিছুক্ষণ পূর্বে তুই আমার এখান থেকে বইটি নিয়ে গিয়েছিস। আর এখন আবার এসে বলছিস বই দিতে। দেখ ভাই এসব ফাইজলামি আমার একদম ভালো লাগে না।
তার বন্ধুত্ব পুরা অবাক আরে তুই বলিস কি! বললাম তো আমি কেবল আসলাম... সত্যি বলছি এর আগে আমি তোর এখানে আসিনি! বিশ্বাস না হলে তুই আমার সাথে চল আমার মাকে গিয়ে জিজ্ঞাসা করবি।
টমি বল না না থাক তার বলতে হবে না। যে বইটির জন্য এসেছিস ,সেই বইটি তো কিছুক্ষণ আগে তুই এসে নিয়ে গিয়েছিস। এখন এসে এসব কথা বলছিস। টমির কাছে ব্যাপারটা কেমন যেন অদ্ভুত লাগলো।
হঠাৎ টমির মা ডেকে উঠলো। টমি তার মায়ের কাছে চলে গেল। তার মা বলল রান্না হয়েছে এখন খেয়ে নে। টমি বলল আমার বন্ধু এসেছে তাকে বিদায় করে আসি। টমি একটু অপেক্ষা করো, যাব আর আসব।
টমি জানালার কাছে গিয়ে দেখে... বাহিরে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে.. সেখানে তার বন্ধু বলে কেউ নেই প্রচুর বাতাস বইছে.. মনে মনে ভাবল তার বন্ধু কি রাগ করে চলে গেল নাকি?
টমি জানালা বন্ধ করে তার মায়ের কাছে চলে আসলো। রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পরল।
রাত্রি টমি বাড়ির চারদিকে একটা অদ্ভুত শব্দ শুনতে পেল। বাড়ির চারপাশে কি যেন হাঁটতেছে। বৃষ্টির মধ্যেও কেউ হাঁটলে একটা শব্দ শোনা যায় ঠিক সেরকম মনে হচ্ছে। কেউ বৃষ্টির মধ্যে হাঁটতেছে বাড়ির চারপাশে।
টমি কিছুটা ভয় পেয়ে গেল। বাড়িতে শুধু তার মা আর টমি। টমি ভয়ে ভয়ে জানালার কাছে গেল এবং জানালা খুলে দেখতে লাগলো, কে বাহিরে এই বৃষ্টির মধ্যে হাঁটতেছে।
জানালা খোলা মাত্রই বাহির থেকে ঠান্ডা বাতাস রুমে প্রবেশ করলো শরীরটা কেমন ঠান্ডা ভাবে শিহরিত করে তুললো। কেমন যেন শীত শীত লাগছে টমির কাছে।
হঠাৎ দেখল বৃষ্টির মধ্যে মাথার উপর কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে কি যেন একটা মানুষের মত তার বাড়ির চারপাশে হাঁটতেছে। টমি বারবার ডাকতে লাগলো এই যে শুনছেন...! কিন্তু না তার কথাই, তার ডাকে কোন কাজ হচ্ছে না ।যে বাহিরে হাটতেছে ,একবারও সে টমির দিকে ফিরে তাকাচ্ছে না।
তাছাড়া অন্ধকার রাতে বৃষ্টির মধ্যে টমি চিনতে পারতেছি না কে হাটতেছে বাহিরে এত রাতে।
টমি রুমে প্রবেশ করল এবং টর্চ লাইট ইয়ে বাহিরে দেখতে লাগলো কি এত রাতে বৃষ্টির মধ্যে বাহিরে হাটতেছে। কিন্তু অনেকক্ষণ যাবৎ টর্চ দিয়ে দেখার চেষ্টা করেও কিছু দেখতে পেল না।
তখন বৃষ্টি টা আরো বেড়ে গিয়ে মাঝেমধ্যে বজ্রপাতের শব্দ বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। টমি তখন সত্যি ভয় পাচ্ছে এবং দৌড়ে রুমের ভিতরে চলে গেল। ও তার মাকে ডেকে তুলল, সবকিছু তার মাকে খুলে বলল।
তার মা বলল ভয় পাস নি। হয়তো কোন চোর এসেছিল। যেহেতু বাড়িতে কেউ নেই। চোর হয়তো সেটা কোন ভাবে টের পেয়েছিল তাই হয়তো চোর এসেছিল তুই ভয় পাস নি শুয়ে পর এখনি।পরলো ও ঘুমিয়ে পরল।
পরদিন সকালবেলা ঘুম থেকে জেগে, হাত মুখ ধুয়ে পড়তে বসল। তখন গতকাল সন্ধ্যা বেলার ঘটনাটি তার বারবার মনে পড়তে লাগলো।
তার কাছ থেকে নতুন বই টি নেওয়ার জন্য তার বন্ধু দ্বিতীয় বার আবারো এসেছিল। তাও আবার বৃষ্টির মধ্যে। যে করেই হোক তাকে আজ তার বন্ধুর সাথে দেখা করতে হবে। এবং এই ব্যাপারে সব কিছু খুলে বলতে হবে।
যেই ভাবা সেই কাজ। কিছুক্ষণ পড়ার পর টমি ঘর থেকে বের হয়ে গেল ও তার বন্ধুর বাড়িতে চলে গেল।
তার বন্ধু পড়ার রুমে পড়তে ছিল।
টমি কে দেখে তার বন্ধুর মা ঘরে যেতে বলল এবং বসতে বলল। টমি তার বন্ধুর কাছে গেল এবং বলল তুই যে গতকালকে আমার এখান থেকে বইটি নিয়ে এসেছিস বইটি এখন কোথায়।
টমি বলল কি বলিস তুই আমি কখন তোর বই আনতে গেলাম। গতকাল তো বৃষ্টির কারণে আমি ঘর থেকে কোথাও বের হইনি। হয়তো কোথাও ভুল হচ্ছে। তোর বিশ্বাস না হলে মাকে জিজ্ঞাসা করে দেখ।
তখন তার বন্ধুর মা টমি কে বলল, হ্যাঁ বাবা গতকাল তো ও কোথাও বের হয়নি। আমাকে বলেছিল তোমার বাসায় যাবে কিন্তু আমি তাকে বৃষ্টির জন্য বাসা থেকে বের হতে দেয়নি।
বন্ধুর মার কাছ থেকে একথা শুনে টমি অবাক হয়ে গেল। মনে মনে ভাবল, তাহলে গতকাল সন্ধ্যাবেলা আমার কাছ থেকে কে বইটি নিয়ে গেল? এমন কি বইটি নেওয়ার জন্য দ্বিতীয়বার সেই বন্ধুটি আমার কাছে এসেছিল এসব ভাবতে লাগলো টমি...
তারপর আর কিছু না বলে সেখান থেকেই টমের বাসায় চলে আসলো। তাহলে কে বইটা নিয়ে গেল। নাকি এটা টমির মনের ভুল ছিল?এটা মনে করে সে তার বাসায় বইটি ভালো করে খুঁজতে লাগলো...
কিন্তু না অনেক খোঁজাখুঁজির পরও বইটি কে কোথাও পেল না। টমি তার মাকে এ ব্যাপারে কিছুই বলল না। কি ঘটছে এসব টমির সাথে বারবার সে এটাই ভাবতে লাগলো।
পরের দিন প্রচুর বৃষ্টি... দিনের বেলায় মনে হচ্ছে সন্ধ্যা হয়ে আসছে... কেমন যেন একটা গুমোট বাধা পরিবেশ।
চারপাশ খুব অন্ধকার হয়ে আছে। আকাশে ঘন ঘন বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে ও মাঝে মাঝে বজ্রপাত হচ্ছে। পরিবেশটাই অন্যরকম লাগছে তার কাছে।
এক রকম বইয়ের চিন্তাটা টমির মাথা থেকে চলে গেল, তার এদিকে আর কোন খেয়াল নেই। পড়ায় মনোযোগ বসানো।
এর ঠিক কিছুক্ষণ পর। বিদ্যুৎ চলে গেল সবকিছু অন্ধকার হয়ে গেল মনে হচ্ছে এখন বুঝি রাত। টমি মোম জ্বালিয়ে পড়তে লাগলো। জানালার পর্দাটা বারবার নড়াচড়া করছে বাতাসে।
হঠাৎ টমির কানে কান্নার শব্দ ভেসে আসলো... কে যেন ঘুঙিয়ে কাঁদতেছে। টমি ভাবল এই বৃষ্টির মধ্যে কে বাহিরে কাঁদতেছে। কৌতহুল বশত জানালার পর্দাটা সরিয়ে দেখলো ,একটু দূরে কে যেন কালো কাপড় দিয়ে ঢাকা ,অন্যদিকে মুখ করে বসে আছে ও সেখান থেকে কান্নার আওয়াজ টি আসতেছে।
টমি বলতে লাগল কে এখানে,,,,, মনে হচ্ছে তার ডাক ওই লোকটির কাছে পৌঁছাচ্ছে না। তাই দ্বিতীয় বার আরো উচ্চস্বরে ডাকতে লাগল কে এখানে?? কিন্তু না এবারেও কোন কাজ হলোনা। লোকটি টমির দিকে ফিরেও তাকালো না।
টমির হঠাৎ গত কালের কথা মনে পড়ে গেল, এবং ভয় পেয়ে গেল। তখন সে তার মার রুমে চলে গেল এবং তার মাকে বিষয়টা বল ল। টমি ভয় যাতে না পায় সেজন্য তার মা বলল চল দেখে আসি।
টমি ও তার মা তার পড়ার রুমে আসলো, জানালার কাছে গিয়ে দেখল, সেখানে কেউ নেই যেখানে কিছুক্ষণ আগে একটি লোক বসে কান্না করছিল।
তার মা বলল কোথায় এখানে তো কাউকে দেখছি না তুই হয়তো ভুল দেখেছিস। টমি বললাম না মা আমি ভুল দেখিনি, আমি নিজের চোখে দেখেছি, এখানে একটি লোক বসে কাঁদতে ছিল।
টমির মা বলল চল এখন আর পড়তে হবে না বিদ্যুৎ এলে তারপরে পড়তে বসবি।
টমি ও তার মার কথা মত পড়ার রুম থেকে চলে গেল। ও তার মায়ের রুমে গিয়ে শুয়ে রইলো। এদিকে তার মা রান্না করি রান্না করছে। তার কাছে কেমন যেন মনে হচ্ছে ,কেউ যেন সব সময় তাকে ফলো করছে ।আড়াল থেকে কেউ যেন তাকে দেখছে। বিষয়টা তাকে অনেকটা ভয়ের মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
সে ভাবতে লাগলো জানিনা লোকটা বৃষ্টির মধ্যে কোথায় গেল? সেদিন টমি সেখানে ঘুমিয়ে পড়ল। সন্ধ্যেবেলা যখন বিদ্যুৎ আসলো তখন তার মা তাকে ডেকে দিল এবং পড়তে বলল।
তার মায়ের কথা মতো টমি তার পড়ার রুমে চলে গেল।
তখনি টমি খুব অবাক হল,,, এটা দেখে যে,,,,,,, গতকাল যে বইটি তার বন্ধু এসে নিয়ে গিয়েছিল,,, যা কিনা বাস্তবে তার বন্ধু নেয়নি, সে বইটি এখন টেবিলের উপর রাখা। তাহলে বইটি কে এখানে নিয়ে আসলো বা কিভাবেই এখানে বইটি আসলো! আবারো ভাবনার মধ্যে ফেলে দিল টমিকে।
যাই হোক বইটি তো অবশেষে পাওয়া গেল।
পরের দিন আবহাওয়া টা খুব ভালো অনেক রোদ উঠেছে... তাই প্রায় দুই দিন পর টমি খেলা করার জন্য বেরিয়ে পড়লো তার বন্ধুদের সাথে।
সেদিন টমি বন্ধুদের সাথে মাঠে চলে গেল এবং খেলতে লাগলো। বন্ধুদের সাথে বল খেলতে তার খুব পছন্দ সব সময় বন্ধুদের নিয়ে খেলা করে।
হঠাৎ আকাশে মেঘ জমতে লাগলো ,মনে হচ্ছে যে কোন সময় বৃষ্টি হতে পারে। তাই সবাই বলল, চল আজ ফিরে যাই ।যেকোনো সময় বৃষ্টি হতে পারে,, তাই সময় থাকতে এখনই চল বাসায় যাই।
সবাই যার যার মত বাসার উদ্দেশ্যে দৌড়াতে লাগলো। টমিও বাসার উদ্দেশ্যে দৌড়াতে লাগলো। হঠাৎ বৃষ্টি পড়তে শুরু করল,সবাই হয়তো বাসায় এখনো পৌঁছাতে পারেনি ,,যাদের বাসার কাছে তারা হয়তো চলে গেছে। কিন্তু টমির বাসা টি একটু দূরেই।
তাই সে একটি পুরাতন পরিত্যক্ত একটি ঘরের পাশে এসে দাঁড়াল।ভাবতে লাগল টমি....কপাল টাই খারাপ।তা না হলে এরকম সুন্দর দিনেও বৃষ্টি পরে।আগে জানলে খেলায় আসত না।
বৃষ্টি ক্রমস বেড়েই চলছে....
টমির কিছুটা ভয় কাজ করছে।কারন যেখানে সে দাড়িয়েছে, সেখানে কত কি ঘটেছে। সবই লোক মুখে শোনা।কিন্তু তার পরও ভয় লাগছে তার।
"
অনেকক্ষণ দাড়িয়ে থাকার পরেও বৃষ্টি কমছে না।হঠাৎ টমি খেয়াল,ঐ পরিত্যক্ত ঘর থেকে কান্নার আউয়াজ ভেসে আসছে।
টমি ঘরের বেড়ার এক ছিদ্র দিয়ে দেখতে লাগলো।টমি টমি ঘরটির ভেতর সত্যি কিছু একটা দেখতে পাচ্ছে। ভালো করে দেখতে গিয়ে টমি বুঝতে পারলো পরিত্যক্ত ঘরটির ভেতর সেই কালো কাপড় পরিহিত মহিলাটি বসে আছে।তার পাশেই ছোট একটা মেয়ে বসা।
টমি দুদিন আগে তার রুমের বাহিরে বৃষ্টির মধ্ে এই মহিলাটিকেই কান্না করতে দেখেছিল।
হঠাৎই মহিলাটি টমের দিকে তাকায়।আর টমি মহিলাটিকে দেখে খুবই ভয় পেয়ে গেল।
টমি দৌড়ে বৃষ্টিতে ভিজে তাদের মার কাছে সবকিছু খুলে বললো।
তার মা বললো বাবা এগুলো তোর মনের ভূল।বিশ্বাস না হলে চল।ঐ পরিত্যক্ত ঘরে চল দেখে আসি।টমি বললো না না মা।তুমি সেখানে যাবে না।সেই মহিলা টা খুবই ভয়ানক দেখতে।
টমির মা বললো তুই ও চল আমার সাথে।টমির ভয় কমানোর জন্ টমিকে নিয়ে তার মা পরিত্যক্ত ঘরটিতে যেতে চাইছে।
টমি ও তারা মা সেই পরিত্যক্ত ঘরটিতে গেল।কিন্তু তখন সেখানে কিছুই দেখা গেল না।টমি অবাক হয়ে গেল।যেই পরিত্যক্ত ঘরে কিছুক্ষণ পূর্বে একটা বাচ্চা ও মহিলা ছিল।নিমিষেই কোথায় চলে গেল বাচ্চা ও মহিলা টি?
তার বললো বাবা বলেছিলাম না এখানে কিছু নেই।চলো বাবা এখন তুমি পড়তে বসবে।
টমি তার মার সাথে রুমে চলে আসলো।টমি ভাবছে,কি এসব ঘঠছে টমির সাথে।টমি পড়তে বসলো।কিন্তু টমির মন পড়ায় বসে না।মহিলা টা কে?কেনই বা কান্না করে মাঝে মাঝে।টমি মহিলাটিকে এর আগেও দেখেছে।কিন্তু বাচ্চাটিকে আজই দেখলো।
টমি পড়া শেষ করে খেয়েদেয়ে শুয়ে পড়লো।একসময় ঘুমিয়ে পরলো।হঠাৎ ঘুমের মধ্ে টমির কানে আসছে ,কে যেন টমির নাম ধরে ডাকছে।টমি এই টমি।টমি তো অবাক। এতো রাতে কে ডাকে টমির নাম ধরে।টমি বিছানা থেকে উঠে বসে।
জানালা টা খুলে পর্দা সরিয়ে দেখতে লাগে কে ডাকছে তাকে।জানালার পর্দাটা সড়াতেই টমির চোখ পরে ঘরের সামনে হিজল গাছটায়।
টমি দেখে হিজল গাছটায় মগডালে একটা মহিলা বসে আছে।মহিলা টা একটা বাচ্চা মেয়েকে তার পাশেই বসিয়ে রেখেছে।
এখন টমির দিকে মহিলা ও বাচ্চা দু্নেই তাকিয়ে আছে।ভয়ানক ভাবে ভেংচি কাটছে মহিলাটি।
টমি হঠাৎই খেয়াল করে বাচ্চাটি মহিলার কাছে নেই।বাচ্চাটি টমির ঘরে চলে এসেছে।টমি এটা দেখে ভয়ে তার মার কাছে চলে যায়।ততার মাকে সবকিছু খুলে বলে।টমির মার বিষটি ভালো লাগেনি।টমি পড়ার প্রতি মনোযোগ বসাতে পারছে না।ঠিকমতো ঘুমাতেও পারছে না।শুধু আজব আজব জিনিস দেখে ভয় পায়।
এভাবে চলতে থাকলে তো হবে না।পরদিন টমির মা একটা পরিচিত তান্ত্রিক বা কবিরাজের কাছে গেল।টমি সবকিছু ঐ তান্ত্রিককে খুলে বললো ।
তান্ত্রিক। টমির বাসায় এলো।এসে বললো আপনাদের টমির দিকে কিছু আত্নার দৃষ্টি আছে।যা আপনার ছেলে টমিকে দেখা দেয়।তবে এরা খারাপ আত্না নয়।তাই আপানার ছেলেছটমিকে কোনও ক্ষতি করেনি।
আর ঐ পরিত্যক্ত ঘরটিতে একসময় এ মহিলা বাস করতো মহিলাটির একটা মেয়ে ছিল।মেয়েটি সহ মহিলাটি ঘরে আগুনে পুড়ে মরেছিল।কিন্তু তাদের আত্না এখনো ঘুড়ে বেরায় চারপাশে।আপনার ছেলে টমিকে ঐ ছোট মেয়েটির ভালো লেগেছিল।তাই মহিলাটি টমির বইটি ছোট মেয়ের আত্নার জন্য নিয়ে গিয়েছিল।
মহিলাটি তার বাচ্চা মেয়ে কে টমির সাথে খেলা করার জন্য নিয়ে আসছিল।কিন্তু টমি তো ভয় পেয়ে গেল।কেননা সেটা তো আত্না ছিল।
টমির মা বললো যেভাবে হোক এটাকে আমার ছেলে টমির থেকে দূরে সরিয়ে দিন।আমি চাই না আমার ছেলে টমির সাথে খারাপ কিছু হোক।
তান্ত্রিক টি তার তন্ত্র মন্ত্র পড়ে পরিত্যক্ত ঘরের চারপাশে কয়েকটা তাবিজ পুতে রাখে।ও টমিকে একটা তাবিজ দেয়।এরপর আর টমির সাথে কোনও কিছু ঘঠেনি।
সমাপ্ত।