ঘরে বসেই করুন পার্লারের মত ফেসিয়াল
অনেকেই আছেন যাদের ফেসিয়াল করতে পার্লারের উপরই নির্ভর করতে হয়। তবে পার্লারে যাওয়া সবসময় সম্ভব হয়ে ওঠে না, তাছাড়া বেশ খরচ সাপেক্ষও। সেক্ষেত্রে সঠিক পদ্ধতি মেনে বাড়িতেই কিন্তু ফেসিয়াল করতে পারেন। বাড়িতে ফেসিয়াল করার ক্ষেত্রে কিছু পদ্ধতি অনসুরণ করতে পারেন।
ফেস ক্লিনজিং
ত্বকের পরিচর্যার আগে সবসময় সঠিকভাবে ত্বক পরিষ্কার করা উচিত। ফেসিয়ালের আগে ধুলো-ময়লা বা মেকআপ তোলার জন্য মুখ সঠিকভাবে পরিষ্কার করা গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য ওয়াইপস বা মেকআপ রিমুভার ব্যবহার করতে পারেন। তারপর, ত্বকের ধরন অনুযায়ী ক্লিনজার ব্যবহার করুন।
এক্সফোলিয়েশন
ফেসিয়ালের দ্বিতীয় ধাপ হল, এক্সফোলিয়েট করা এবং মৃত ত্বক অপসারণ করা। এটি ত্বক পরিষ্কার ও উজ্জ্বল করে। ত্বকের ধরন অনুযায়ী স্ক্রাবার ব্যবহার করতে পারেন। এজন্য বৃত্তাকার গতিতে মুখ ও গলায় আলতো করে ঘষুন। কমপক্ষে এক বা দুই মিনিট স্ক্রাব করুন এবং হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
ম্যাসাজ
রক্ত সঞ্চালন এবং পেশি টান উন্নত করতে ম্যাসাজ অপরিহার্য। এজন্য পরিমাণ মতো ফেস ম্যাসাজ ক্রিম নিন। এবার কপালের মাঝখান দিয়ে শুরু করুন এবং তারপরে ধীরে ধীরে গাল, নাক এবং থুতনি ম্যাসাজ করুন। সবশেষে, ঠোঁটের ওপর ম্যাসাজ করুন এবং চোয়ালের দিকে ম্যাসাজ করুন। গলাও ম্যাসাজ করতে ভুলবেন না, কারণ এটিও সমান গুরুত্বপূর্ণ। ভালো করে ম্যাসাজ করার পর পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
ভাপ নিন
এক্সফোলিয়েশন এবং ম্যাসাজ করার পরের ধাপ হল ভাপ নেওয়া। এটি ত্বকের ছিদ্রগুলি খুলতে এবং এর ভিতরে আটকে থাকা ময়লা পরিষ্কার করতে সহায়তা করে। যাদের খুব ব্রণ হয় তাদের জন্য এই ধাপটি খুবই উপকারী। যদি আপনার বাড়িতে স্টিমার না থাকে, তাহলে একটি বড় বাটিতে পানি ফুটিয়ে ভাপ নিতে পারেন। এই সময় তোয়ালে দিয়ে আপনার মাথা ঢেকে রাখবেন। ৫-১০ মিনিট ভাপ নিলে উপকার পাবেন।
ফেস মাস্ক
ফেস মাস্ক ত্বকের আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। এর জন্য, শিট মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন বা বাড়িতে নিজেই মাস্ক তৈরি করতে পারেন।
টোনিং ও ময়েশ্চারাইজিং
ত্বকের যত্নের ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ হল টোনিং এবং ময়েশ্চারাইজিং। এজন্য একটি তুলোর প্যাড নিন, তাতে অল্প পরিমাণে টোনার ঢেলে পুরো মুখে লাগান। তারপর মুখে ময়েশ্চারাইজার লাগান। মুখ এবং গলায় আলতো করে ক্রিম ম্যাসাজ করুন।
ফেসিয়াল করার উপকারিতা
ফেসিয়াল ম্যাসেজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত ফেস ম্যাসাজে মুখের ফাইন লাইনস, রিঙ্কেলস, ডার্ক স্পট এবং পিগমেন্টেশন কমায়। এছাড়া রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি এবং ত্বকের কোলাজেন উৎপাদন বৃদ্ধি সাহায্য করে। যার ফলে ত্বক সুন্দর ও মসৃণ হয়। তাই নিয়মিত মুখে ম্যাসেজ করলে আপনি অনেক উপকার পাবেন। আপনার ত্বক হয়ে উঠবে আকর্ষণীয় ও কোমল। সঠিক নিয়মে ম্যাসেজ করলে ত্বকের বলিরেখা দূর হবে। সেইসঙ্গে আপনার ত্বক মসৃণ হবে।
রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে
মুখে ম্যাসেজ করলে ফোলাভাব কমে যায়। ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। ত্বকের কোষগুলোতে অক্সিজেন এবং পুষ্টি জোগায়। আপনার ত্বক থাকবে সতেজ। নিয়মিত ম্যাসেজে আপনি পরিষ্কার ত্বক পাবেন।
ত্বককে শিথিল করে
মুখে ম্যাসেজ করলে ত্বক শিথিল থাকে। ত্বকে একটি প্রশান্ত সংবেদন পাওয়া যায়। তাৎক্ষণিকভাবে চাপ এবং উত্তেজনা দূর করে। তাই রাতে ঘুমানোর আগে ম্যাসেজ করুন। এতে পেশিগুলো শিথিল থাকবে।
বলিরেখা কমায়
একটি ম্যাসেজ আপনার ত্বকের সামগ্রিক চেহারা উন্নত করতে সাহায্য করবে। আপনার ত্বকে ম্যাসেজ করার সময় এই পণ্যটি ব্যবহার করুন যাতে আপনার ত্বক এটি দ্রুত শোষণ করে। বলিরেখা কমায়। ত্বক টানটান হয়।
ত্বককে কোমল করে
সঠিক ফেসিয়াল ম্যাসাজ ত্বকের গঠন উন্নত করতে সাহায্য করে। ত্বক নরম ও কোমল রাখে। এটি ডিহাইড্রেটেড এবং শুষ্ক ত্বককে ময়শ্চারাইজ করে। এছাড়া ত্বক থেকে টক্সিন দূর হয়। ত্বককে তারুণ্যের আভা দেয়।
ব্রণ দূর করে
ব্রণ হল ত্বকের সবচেয়ে সাধারণ সমস্যাগুলোর মধ্যে একটি। যা আমরা সবাই সম্মুখীন হয়েছি। ফেসিয়াল ম্যাসাজ রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করে। যা ব্রণ দূর করে। তবে খুব জোরে ম্যাসাজ করবেন না। বিশেষ করে সংবেদনশীল জায়গাগুলোতে আস্তে আস্তে ম্যাসাজ করুন।
ধন্যবাদ